আমরা যতই চাঁদ,
মহাকাশ জয় করিনা
কেন, পৃথিবীর অনেক
রহস্যই আজো অজানাই
রয়ে গেছে। আমাজন
অরণ্য এমনই একটি রহস্য। আমাজন জঙ্গল
নিয়ে আগ্রহ নেই এমন
মানুষ খুব কমই আছে। আর
আগ্রহ থাকবেই বা না
কেন! এই পুরো জঙ্গলটাই
তো একটা রহস্য আর বিষ্ময়ের প্যাকেট। আমাজন বা আমাজন
রেইনফরেস্টের কথা
বলতে গেলে একটি কথা
বারবার বলতে হয়, আর
তা হলো- “পৃথিবীর
সবচেয়ে বড়….”। যেমন- পৃথিবীর সবচেয়ে বড়
বন এটি, পৃথিবীর
সবচেয়ে বড় রিভার
বেসিন অথাৎ সবচেয়ে
বড় নদীর অববাহিকা
এই আমাজনে, পৃথিবী সবচেয়ে বড় নদী এই
অঞ্চলে….ইত্যাদি। আমাজন বন হলো আমাজন
নদীর অববাহিকায়
অবস্থিত পৃথিবীর
সবচেয়ে বড় নিরক্ষীয়
বন, যা দক্ষিন
আমেরিকা মহাদেশের উত্তরভাগে অবস্থিত
৯টি দেশের
অন্তর্ভুক্ত। এর আয়তন
প্রায় সাড়ে পাঁচ
মিলিয়ন বর্গ
কিলোমিটার। আমাজন বন অত্যন্ত দুর্গম। তবে
দক্ষ গাইড সহ নদী পথে
ভ্রমন এই নিরক্ষীয়
বনের প্রাকৃতিক
বিষ্ময় দেখার
সবচেয়ে ভালো উপায়। প্রাচিনকাল থেকেই
অভিযাত্রীরা আমাজনে
যাত্রা করে মূলত স্বর্ণ,
রৌপ্য এবং ধন-রত্নের
খোঁজে। পর্তুগীজ
অভিযাত্রীরা বিশ্বাস করত, বিশাল এ বনের
মধ্যেই কোথাও লুকিয়ে
আছে “এলডোরাডো” নামক
এক গুপ্ত শহর যা
পুরোপুরি সোনার
তৈরি।এই ভ্রান্ত ধারনাটি এসেছে
গ্রীক পৌরাণিক গল্প
থেকে যেখানে বলা
হয়েছে যে “এলডোরাডো”
নামক সোনায় মোড়ানো
শহরটি পাহাড়া দেয় এক শ্রেনীর বিশেষ
নারী যোদ্ধারা;
যাদেরকে গল্পে
“আমাজন” বলে অভিহিত
করা হয়েছে। পর্তুগিজ,
স্প্যানিশ এবং ফ্রেঞ্চ অভিযাত্রীরা
প্রতিযোগীতায় নামে
এই “এলডোরাডো” শহর
আবিষ্কারের জন্য।
কিন্তু কেউ এই
কাল্পনিক শহরের খোঁজ পায়নি।শহরের সন্ধান
না পেলেও স্থায়ী হয়ে
যায় সেই নারী
যোদ্ধাদের নাম।
তাদের নামানুসারেই
এই জঙ্গলের নাম হয় “আমাজন” জঙ্গল। আমাজনকে রেইনফরেস্ট
বলা হলেও এর অর্থ
কিন্তু এই না যে এখানে
সারা বছর বৃষ্টিপাত
হয়। বরং রেইনফরেস্ট
বলা হয় এখানকার অত্যধিক আর্দ্রতা,
বৃষ্টিপাত (বর্ষা
মৌসুমে) এবং গরম
আবহাওয়ার কারনে।
প্রচন্ড গরমের কারনে
এখানে বাষ্পীভবনের হার অনেক বেশি যা
আর্দ্রতা এবং
বৃষ্টিপাত বেশি
হওয়ার অন্যতম কারন। এই গরম আবহাওয়া,
বৃষ্টিপাত এবং
আর্দ্রতার কারনে এ
বনে উদ্ভিদ ও
প্রানিকুলের
বৈচিত্রময় সমাহার দেখা যায়। এখানে
আছে ১২০ ফুট উঁচু গাছ, ৪০
হাজার প্রজাতির
উদ্ভিদ, ২.৫ মিলিয়ন
প্রজাতির কীট-পতঙ্গ
১,২৯৪ প্রজাতির পাখি, ৩৭৮ প্রজাতির সরীসৃপ,
৪২৮ প্রজাতির উভচর
এবং ৪২৭ প্রজাতির
স্তন্যপায়ী প্রানি সহ
হাজারো প্রজাতির
অজানা জীব-অনুজীব। এখানকার
প্রানিবৈচিত্র
অতুলনীয়। মজার বিষয়
হল হাজারো রকমের
প্রানির সমাহার
থাকলেও এখানকার ইকোসিস্টেম অত্যন্ত
শক্তিশালী যা
মিলিয়ন বছর ধরে
টিকে আছে।
এই বনের
স্তন্যপায়ীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল
জাগুয়ার, গোলাপি
ডলফিন (একমাত্র
প্রজাতির ডলফিন যা
স্বাদু পানিতে বাস
করে),তামানডুয়া, তাপির, মানাতি, ইঁদুর,
কাঠবিড়ালি,বাদুড়
ইত্যাদি। পাখিদের মধ্যে
উল্লেখযোগ্য হল ঈগল,
টুকান, হোয়াটজিন,
দ্রুতগামী হামিং
বার্ড এবং আরো রঙ-
বেরঙের অনেক পাখি। পৃথিবীর সকল পাখির
এক পঞ্চমাংশ পাখি এই
বনের অধিবাসী।
মাছের মধ্যে আছে
মাংসাশী লাল
পিরানহা, বিপদজনক বৈদ্যুতিক মাছ এবং
স্বাদু পানির অন্যতম
বড় মাছ-পিরারুকু, যার
ওজন ১৫০ কেজি পর্যন্ত
হতে পারে। উভচর
প্রানির মধ্যে লাল চোখ বিশিষ্ট গেছো
ব্যাঙের নাম না
বললেই নয়। সরিসৃপের
মধ্যে আছে বিখ্যাত
সাপ বোয়া যা তার
শিকারকে পেঁচিয়ে ধরে শ্বাসরোধ করে
মেরে ফেলে। তাছাড়া
রয়েছে কুমির,
অ্যালিগেটর, কচ্ছপ
প্রভৃতি। এছাড়াও
বিভিন্ন প্রজাতির পিঁপড়া, হাতের তালুর
সমান বড় তেলাপোকা,
রঙ-বেরঙের প্রজাপতি,
শুঁয়োপোকা আর জানা
অজানা হরেক রকমের
পোকা-মাকড়ের বসতি এই আমাজনে। তবে এ বন শুধু জীবজন্তু
আর উদ্ভিদের জন্যই
স্বর্গরাজ্য নয় বরং
এখানে অনেক মনুষ্য
বসতিও আছে। হাজার
বছর ধরে এখানে আদি ইনডিয়ানরা বসবাস
করে আসছে। বর্তমানে
এখানে বসবাসরত
ইনডিয়ানের সংখ্যা
প্রায় ২ লাখ। এই বনে
গড়ে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায়
৭৫,০০০ ধরনের বৃক্ষ
পাওয়া যায়।বিশ্বের
মোট ঔষধের ২৫%
কাঁচামাল আসে এ বনের
মাত্র ৪০০ প্রজাতির গাছ থেকে। বিভিন্ন জীবের
পাশাপশি কিছু
ক্ষতিকর প্রানিও আছে
আমাজনে। তাদের
মধ্যে পিরানহা,
রক্তচোষা বাদুর, বিষাক্ত ব্যাঙ,
বৈদ্যুতিক মাছ, রেবিস,
ম্যালেরিয়া, ইয়েলো
ফিভার, ডেঙ্গু
ফিভারের জীবানু
উল্লেখযোগ্য। তাছাড়া জাগুয়ার এবং
অ্যানাকোন্ডা-ও অনেক
সময় বিপদের কারন
হতে পারে। আমাজন হল বিশাল এবং
জটিল এক জায়গা
যেখানে প্রকৃতি তৈরি
করেছে অদ্বিতীয় এক
ভৌগলিক ও জৈবিক
সমন্বয় যা পৃথিবীর অন্য কোথাও
অনুপস্থিত। আমাজনের
রহস্য এবং ভয় আমাদের
একই সাথে জয় করতে
হবে এবং সাথে সাথে
জিইয়ে রাখতে হবে। নতুবা বিশ্বায়নের এই
যুগে আমাজনের রহস্য
নিয়ে আমরা হয়ত আর
বেশিদিন গর্ব করতে
পারব না।
মহাকাশ জয় করিনা
কেন, পৃথিবীর অনেক
রহস্যই আজো অজানাই
রয়ে গেছে। আমাজন
অরণ্য এমনই একটি রহস্য। আমাজন জঙ্গল
নিয়ে আগ্রহ নেই এমন
মানুষ খুব কমই আছে। আর
আগ্রহ থাকবেই বা না
কেন! এই পুরো জঙ্গলটাই
তো একটা রহস্য আর বিষ্ময়ের প্যাকেট। আমাজন বা আমাজন
রেইনফরেস্টের কথা
বলতে গেলে একটি কথা
বারবার বলতে হয়, আর
তা হলো- “পৃথিবীর
সবচেয়ে বড়….”। যেমন- পৃথিবীর সবচেয়ে বড়
বন এটি, পৃথিবীর
সবচেয়ে বড় রিভার
বেসিন অথাৎ সবচেয়ে
বড় নদীর অববাহিকা
এই আমাজনে, পৃথিবী সবচেয়ে বড় নদী এই
অঞ্চলে….ইত্যাদি। আমাজন বন হলো আমাজন
নদীর অববাহিকায়
অবস্থিত পৃথিবীর
সবচেয়ে বড় নিরক্ষীয়
বন, যা দক্ষিন
আমেরিকা মহাদেশের উত্তরভাগে অবস্থিত
৯টি দেশের
অন্তর্ভুক্ত। এর আয়তন
প্রায় সাড়ে পাঁচ
মিলিয়ন বর্গ
কিলোমিটার। আমাজন বন অত্যন্ত দুর্গম। তবে
দক্ষ গাইড সহ নদী পথে
ভ্রমন এই নিরক্ষীয়
বনের প্রাকৃতিক
বিষ্ময় দেখার
সবচেয়ে ভালো উপায়। প্রাচিনকাল থেকেই
অভিযাত্রীরা আমাজনে
যাত্রা করে মূলত স্বর্ণ,
রৌপ্য এবং ধন-রত্নের
খোঁজে। পর্তুগীজ
অভিযাত্রীরা বিশ্বাস করত, বিশাল এ বনের
মধ্যেই কোথাও লুকিয়ে
আছে “এলডোরাডো” নামক
এক গুপ্ত শহর যা
পুরোপুরি সোনার
তৈরি।এই ভ্রান্ত ধারনাটি এসেছে
গ্রীক পৌরাণিক গল্প
থেকে যেখানে বলা
হয়েছে যে “এলডোরাডো”
নামক সোনায় মোড়ানো
শহরটি পাহাড়া দেয় এক শ্রেনীর বিশেষ
নারী যোদ্ধারা;
যাদেরকে গল্পে
“আমাজন” বলে অভিহিত
করা হয়েছে। পর্তুগিজ,
স্প্যানিশ এবং ফ্রেঞ্চ অভিযাত্রীরা
প্রতিযোগীতায় নামে
এই “এলডোরাডো” শহর
আবিষ্কারের জন্য।
কিন্তু কেউ এই
কাল্পনিক শহরের খোঁজ পায়নি।শহরের সন্ধান
না পেলেও স্থায়ী হয়ে
যায় সেই নারী
যোদ্ধাদের নাম।
তাদের নামানুসারেই
এই জঙ্গলের নাম হয় “আমাজন” জঙ্গল। আমাজনকে রেইনফরেস্ট
বলা হলেও এর অর্থ
কিন্তু এই না যে এখানে
সারা বছর বৃষ্টিপাত
হয়। বরং রেইনফরেস্ট
বলা হয় এখানকার অত্যধিক আর্দ্রতা,
বৃষ্টিপাত (বর্ষা
মৌসুমে) এবং গরম
আবহাওয়ার কারনে।
প্রচন্ড গরমের কারনে
এখানে বাষ্পীভবনের হার অনেক বেশি যা
আর্দ্রতা এবং
বৃষ্টিপাত বেশি
হওয়ার অন্যতম কারন। এই গরম আবহাওয়া,
বৃষ্টিপাত এবং
আর্দ্রতার কারনে এ
বনে উদ্ভিদ ও
প্রানিকুলের
বৈচিত্রময় সমাহার দেখা যায়। এখানে
আছে ১২০ ফুট উঁচু গাছ, ৪০
হাজার প্রজাতির
উদ্ভিদ, ২.৫ মিলিয়ন
প্রজাতির কীট-পতঙ্গ
১,২৯৪ প্রজাতির পাখি, ৩৭৮ প্রজাতির সরীসৃপ,
৪২৮ প্রজাতির উভচর
এবং ৪২৭ প্রজাতির
স্তন্যপায়ী প্রানি সহ
হাজারো প্রজাতির
অজানা জীব-অনুজীব। এখানকার
প্রানিবৈচিত্র
অতুলনীয়। মজার বিষয়
হল হাজারো রকমের
প্রানির সমাহার
থাকলেও এখানকার ইকোসিস্টেম অত্যন্ত
শক্তিশালী যা
মিলিয়ন বছর ধরে
টিকে আছে।
এই বনের
স্তন্যপায়ীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল
জাগুয়ার, গোলাপি
ডলফিন (একমাত্র
প্রজাতির ডলফিন যা
স্বাদু পানিতে বাস
করে),তামানডুয়া, তাপির, মানাতি, ইঁদুর,
কাঠবিড়ালি,বাদুড়
ইত্যাদি। পাখিদের মধ্যে
উল্লেখযোগ্য হল ঈগল,
টুকান, হোয়াটজিন,
দ্রুতগামী হামিং
বার্ড এবং আরো রঙ-
বেরঙের অনেক পাখি। পৃথিবীর সকল পাখির
এক পঞ্চমাংশ পাখি এই
বনের অধিবাসী।
মাছের মধ্যে আছে
মাংসাশী লাল
পিরানহা, বিপদজনক বৈদ্যুতিক মাছ এবং
স্বাদু পানির অন্যতম
বড় মাছ-পিরারুকু, যার
ওজন ১৫০ কেজি পর্যন্ত
হতে পারে। উভচর
প্রানির মধ্যে লাল চোখ বিশিষ্ট গেছো
ব্যাঙের নাম না
বললেই নয়। সরিসৃপের
মধ্যে আছে বিখ্যাত
সাপ বোয়া যা তার
শিকারকে পেঁচিয়ে ধরে শ্বাসরোধ করে
মেরে ফেলে। তাছাড়া
রয়েছে কুমির,
অ্যালিগেটর, কচ্ছপ
প্রভৃতি। এছাড়াও
বিভিন্ন প্রজাতির পিঁপড়া, হাতের তালুর
সমান বড় তেলাপোকা,
রঙ-বেরঙের প্রজাপতি,
শুঁয়োপোকা আর জানা
অজানা হরেক রকমের
পোকা-মাকড়ের বসতি এই আমাজনে। তবে এ বন শুধু জীবজন্তু
আর উদ্ভিদের জন্যই
স্বর্গরাজ্য নয় বরং
এখানে অনেক মনুষ্য
বসতিও আছে। হাজার
বছর ধরে এখানে আদি ইনডিয়ানরা বসবাস
করে আসছে। বর্তমানে
এখানে বসবাসরত
ইনডিয়ানের সংখ্যা
প্রায় ২ লাখ। এই বনে
গড়ে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায়
৭৫,০০০ ধরনের বৃক্ষ
পাওয়া যায়।বিশ্বের
মোট ঔষধের ২৫%
কাঁচামাল আসে এ বনের
মাত্র ৪০০ প্রজাতির গাছ থেকে। বিভিন্ন জীবের
পাশাপশি কিছু
ক্ষতিকর প্রানিও আছে
আমাজনে। তাদের
মধ্যে পিরানহা,
রক্তচোষা বাদুর, বিষাক্ত ব্যাঙ,
বৈদ্যুতিক মাছ, রেবিস,
ম্যালেরিয়া, ইয়েলো
ফিভার, ডেঙ্গু
ফিভারের জীবানু
উল্লেখযোগ্য। তাছাড়া জাগুয়ার এবং
অ্যানাকোন্ডা-ও অনেক
সময় বিপদের কারন
হতে পারে। আমাজন হল বিশাল এবং
জটিল এক জায়গা
যেখানে প্রকৃতি তৈরি
করেছে অদ্বিতীয় এক
ভৌগলিক ও জৈবিক
সমন্বয় যা পৃথিবীর অন্য কোথাও
অনুপস্থিত। আমাজনের
রহস্য এবং ভয় আমাদের
একই সাথে জয় করতে
হবে এবং সাথে সাথে
জিইয়ে রাখতে হবে। নতুবা বিশ্বায়নের এই
যুগে আমাজনের রহস্য
নিয়ে আমরা হয়ত আর
বেশিদিন গর্ব করতে
পারব না।
No comments:
Post a Comment